Adi Addya Shakti Mahamaya Trust

আমার অনুভূতি
রাজকমল নন্দী – সম্পাদক, আদি আদ্যাশক্তি মহামায়া ট্রাস্ট,
দিনের পর যেমন অন্ধকার হয়, তেমনি সুখের পর দুঃখ। কিংবা দুঃখের পর সুখ প্রতিটি মানুষের জীবনে নেমে আসে। সুখ যেমন উপভোগ করতে শেখায়, ঠিক তেমনি দুঃখ জীবনকে তৈরী করতে শেখায়। অথবা জীবন কী? এর মানে বোঝায়।
আমার জীবনে ঘটেছে সুখ – দুঃখের খেলা। আমার জীবনে ভূল সিদ্ধান্ত ছিল রাজনীতি করা। তাই এই রাজনীতিতে পেয়েছি হতাশ আর ব্যার্থতা। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নষ্ট হয়েছে টাকা পয়সা। ফলে সংকট জনক পরিস্থিতি আসতে বেশিদিন সময় লাগেনি। হতাশা, ব্যার্থতা ও অস্থিরতার বেড়াজালে আমি আবদ্ধ। এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে সেটা আমার জানা ছিল না। জানা ছিল না পরিস্থিতি মানুষকে চিনিয়ে দেয়। স্বভাবতই একটার পর একটা আপন মানুষ পড় হয়ে গেল। সেই সংকট জনক পরিস্থিতিকে কাটিয়ে ওঠার জন্য পরামর্শ দিল। আমি তার সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারি নি। আমার সম্যক ধারণা ছিল মন্দির মানে টাকা ইনকামের ফাঁদ। আমি দেখে ছিলাম তারকেশ্বরে, আমি দেখে ছিলাম কালিঘাটে, আমি দেখেছিলাম তারাপীঠে। সেই থেকেই আমার সম্যক ধারণা আমার অনিচ্ছাবশতঃ আমাকে আমার দুঃসময়ের বন্ধু নিয়ে গেল এক মন্দিরে। এই মন্দির সম্বন্ধে কোন ধ্যান ধারণা ছিল না। স্বভাবতই যা হয় – আমি ঠাকুরের প্রসাদ ফেলে চলে গেলাম। আর একদিন বৃষ্টির ভয়ে সেই মন্দিরে পদার্পন করলাম। বারবার এই মন্দিরে যাবার ভয়ে বন্ধুত্ব বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু বিধির বিধান কে করিবে খন্ডন। মন্দিরে যাবার ফলে আমি মানসিক জোর পেলাম। আমি পারি না নতুন করে জীবন শুরু করতে? তখন আমি মন্দিরে ছুটে গেলাম। মা – বলল শুরু কর, নতুনভাবে, আমি আছি তোর সাথে। দুঃখের মাঝে পথ চলা শুরু করলাম। অনেক কিছু ঘটনা ঘটেছে। সব কিছুই দেখেছি আর নীরবে সহ্য করে গেছি। মায়ের উৎসাহে জীবন চলছে দুঃখের মাঝে । একটু একটু করে আমার পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। চঞ্চলতা কাটছে, মানসিক যন্ত্রনা কাটছে, অস্থিরতাটাও তার সাথে কিছু কমছে। দেখছি স্বপ্ন কিন্তু কী এই স্বপ্ন? মানেটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দেখতাম আর ভুলতাম। বুঝে উঠতে পারতাম না। মা – আদি আদ্যা শক্তি মহামায়া মাকে ডাকতে শুরু করলাম। মহামায়া মাকে দেখার জন্য মন আমার ছটফট করতে থাকে। মা-তুই কোথায়? একবার দেখা দে। আমার হৃদয় জুড়ে তুই-ই বিরাজমান। তোকে ছেড়ে আমি আর থাকতে পারছি না। যা হল মা – আমাকে দেখা দিল। ২০ মিনিটের দর্শন।
মা – মানে কোন ঠাকুর নয়
মা – মানে সূর্যের চক্র।
ঠিক ভোর ৪ টেই আমি তিনতলা থেকে নেমে আসার শব্দ পাচ্ছি। দরজা খোলার আওয়াজ পাচ্ছি। গেট খোলার আওয়াজ পাচ্ছি। চোখ দুটো চিটিয়ে গেল। চোখ বন্ধ তো কী হয়েছে। আমি আমার কপাল দিয়ে দেখতে পাচ্ছি। মা – মানে সূর্য্যের চক্র আমাকে আমার মন্দিরের মায়ের হাতের স্পর্শে আমাকে আকাশ পথে উড়িয়ে নিয়ে গেল – হরিদ্বার সংলগ্ন এলাকা, যেখানে বাবার স্থান, সেবা, শুশ্রষা করে আবার আকাশ পথে বাড়ি ফেরা মায়ের সাথে। এটা কিন্তু স্বপ্ন নয়। এটাই বাস্তব সত্য। এটা ছিল মায়ের প্রথম দর্শন।
আস্তে আস্তে দিব্যজ্ঞান, দিব্যআত্মা জাগ্রত হচ্ছে। স্বপ্ন দেখছি। আর তার মানে বুঝতে কোন অসুবিধা হয় নি। আমার দুঃখ ছিল আমার উপার্জন থেকে আমার গর্ভধারিণী মাকে কিছু দিতে পারিনি। আজ তাই দুঃখ মোচন হয়েছে। আদ্যাশক্তি মহামায়া মাতো আমার মা। কারণ তিন মাস ধরে স্বপ্ন দেখছি। আমি আমার গর্ভধারিণী মাকে দেখতে পাচ্ছি, আমি আমার আত্মীয় স্বজনকে দেখতে পাচ্ছি কিন্তু কেন? এরা সকলে মৃত। এদের সৎকাজ আমি থেকে করেছি। কিন্তু কেন বারবার দেখছি – এদের সৎকার করছি। তিনমাস পর মাকে জিজ্ঞেস করলাম – মায়ের বুঝতে অসুবিধা হল না, মা বলে উঠল – এই কথা, ছেলে তোর সাথে আমার সম্পর্কটা এরা জানে। তুই বললে আমি না করব না – তাই ওরা উদ্ধার হতে চাইছে। তুই চিন্তা করিস না ছেলে – আমি ওদের উদ্ধার করে দিচ্ছি। এরপর থেকে আমি আর একদিনও ওদের দেখতে পাইনি । স্বভাবতই অনুমান করা যায়। আমার মা, আত্মীয় স্বজন উদ্ধার হয়ে গেছে। আর আমি আমার মাকে পেয়ে ভালোই আছি। কিছু হোক নাই হোক জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছি।

 

Our Work

Social Media Handle

Scroll to Top